টেকনাফে কুকুরকে ভ্যাকসিন প্রয়োগে জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচি শুরু

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৪ years ago

আজিজ উল্লাহ : টেকনাফ বাহারছড়া জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির আওতায় শামলাপুর বাজারের সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মেরিনড্রাইভ সংলগ্ন নামার বাজারের কুকুরকে টিকা দেয়া হয়েছে।২০২২ সালের মধ্যে দেশ থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কর্মসূচির অংশ হিসেবে মূলত এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে।

জানা যায়, রবিবার(৩১ জানুয়ারি) ভোরবেলা শামলাপুর বাজারের সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরে আশপাশসহ নামার বাজারের বেওয়ারিশ ৬৬টি কুকুকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্যাক্সিনেটর আইয়ুব আলী ও বাহারছড়া ইউনিয়ন সুপারভাইজার বারেক আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৪টি টিম মিলে এই ভ্যাকসিন কুকুরের শরীরে প্রয়োগ করে এতে ৬টি কুকুর ছানাসহ ২৫টি কুত্তা ও ৩৫টি কুত্তীকে জাল মুড়িয়ে বেঁধে রেখে টিকা দেয়া হয়।

কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক নামক ভাইরাসজনিত এক ধরনের মারাত্মক সংক্রামক রোগ হয়। মূলত কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে এ রোগ ছড়ায়।এই রোগকে হাইড্রোফোবিয়া বা পাগলা রোগও বলা হয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর জলাতঙ্ক রোগে বহু মানুষ মারা যায়। কুকুরকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগের বিস্তার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এদিকে সরকারের আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দেশ থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের অংশ হিসেবে কুকুরকে টিকা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তা নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী। অতীতে বর্বর কায়দায় কুকুর নিধন করা হতো। এভাবে কুকুর নিধনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা দূর করতে প্রাণী কল্যাণ আইন কার্যকর হওয়ায় এর কোনো সুযোগও নেই। ফলে কুকুর নিয়ন্ত্রণ ও প্রাণীটি যাতে করে কোনোভাবেই জনস্বাস্থ্য ও জনদুর্ভোগের কারণ না হয়, সেদিকে মনোযোগ জরুরি হয়ে পড়েছে। কুকুরকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে সহজেই এই পরিস্থিতি সামাল সম্ভব।

‘প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯থ অনুযায়ী কোনো প্রাণী হত্যা করলে ছয় মাসের জেল কিংবা ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে প্রাণীর প্রতি যেকোনো ধরনের নিষ্ঠুরতা মোকাবিলা করা সম্ভব। টেকনাফে কুকুরকে টিকা দেওয়ার যে কর্মসূচি চালু হয়েছে, তা সারা দেশে কার্যকর করা গেলে কুকুরের প্রতি নিষ্ঠুরতা যেমন কমে আসবে, তেমনি জনগণও জলাতঙ্ক রোগের বিপদ থেকে মুক্ত থাকবে।

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন জানান, ‘ বাজারের আশপাশে বেওয়ারিশ অনেক কুকুর খাদ্যের সন্ধানে ঘুরাফেরা করে বিভিন্ন সময় সঙ্ঘবদ্ধভাবে আক্রমণ করার চেষ্টাও করে তাই কুকুরের লালা থেকে বা কামড়ের ফলে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাই জলাতঙ্ক নিরোধক টিকা প্রয়োগ করাতে সেই ভয় আর থাকবে না’।