টেকনাফ টুডে ডেস্ক : টেকনাফ জালিয়ার দ্বীপে নির্মাণাধীন নাফ ট্যুরিজম পার্কে কেবল কার স্থাপন প্রকল্পের পরামর্শক হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে।
দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে টেকনাফের নেটং পাহাড় থেকে সাড়ে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি কেবল কার লাইন স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা।
কেবল কার স্থাপনের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই, পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব সমীক্ষা চালাবে চুয়েট। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে একটি স্ট্রাকচারাল ডিজাইনও প্রস্তুত করবেন সরকারি এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার কারওয়ানবাজারে বেজা কার্যালয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেজার মধ্যে এ বিষয়ে একটি পরামর্শ পরিষেবা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বেজার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমীক্ষা যাচাই ছাড়াও পরবর্তীতে কেবল কার নির্মাণকালীন সময়ে চুয়েট তত্ত্বাবধায়ন ও পর্যবেক্ষণ কাজে যুক্ত থাকবে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় ৩৮ মাস সময় লাগবে।
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদীর তীরে ডিম্বাকৃতি দ্বীপটি স্থানীয়দের মাঝে ‘জালিয়ার দ্বীপ’ নামে পরিচিত। নেটং পাহাড়ের কোল ঘেঁষে ২৯০ একর আয়তনের দ্বীপে নাফ ট্যুরিজম পার্ক নামের একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে বেজা।
অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ দ্বীপটিকে ট্যুরিজম পার্ক করায় আগ্রহ দেখিয়েছে। ‘শিগগরিই’ খণ্ডে খণ্ডে অথবা অখণ্ড হিসেবে পার্কের অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হবে।
ঝুলন্ত ব্রিজ, পাঁচ তারকা হোটেল, রিভার-ক্রুজ, সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের বিশেষ ব্যবস্থা, ভাসমান জেটি, শিশু পার্ক, ইকো-কটেজ, ভাসমান রেস্টুরেন্টসহ নানাবিধ বিনোদনের সুবিধা থাকবে এ দ্বীপে। পার্ক নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট কাজ চলছে, যার ভৌত অগ্রগতি প্রায় ৭০ শতাংশ।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রফিকুল আলম এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান কবিরও ছিলেন অতিথি। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “একটি আধুনিক কেবল কার স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বাংলাদেশ এখন আরেকটি ইতিহাস রচনা করতে চলেছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল সৃষ্টির পাশাপাশি বিশেষায়িত এবং বিশ্বমানের পর্যটন পার্ক তৈরি করতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।”
উপাচার্য রফিকুল আলম বলেন, “নাফ ট্যুরিজম পার্কের কেবল কার তৈরির পরিকল্পনা সফল করতে চুয়েট তাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। নিঃসন্দেহে এটি হবে দর্শনীয়, উপভোগ্য এবং আকর্ষণীয় একটি স্থাপনা।”
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ট্যুরিজম খাতের উন্নয়নের জন্য খাতভিত্তিক প্রয়োজনীয় দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বেজা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সংস্থার সাথে নিয়মিত কাজ করছে। এ সব ট্যুরিজম পার্কে বিনিয়োগের জন্য ইতোমধ্যে দেশি- বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখাচ্ছে।