নিজস্ব প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের টেকনাফে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের বাড়িতে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৭ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সদর ইউনিয়নের লেংগুরবিলস্থ বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। তবে কে বা কারা ভাংচুর করেছে সে ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছেনা। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে পুলিশ বাড়িটি ভাংচুর করেছে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাংচুরের খবর শুনেছি, তবে কে বা কারা ভাঙচুর করেছে তা এখনো জানা যায়নি। এছাড়া তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো থানায় কোন অভিযোগ জানানো হয়নি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে পুলিশের ধারণা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা গডফাদার। টেকনাফ সীমান্তে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদক বিরোধী তৎপরতায় জনগণের মাঝে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে একধরনের ঘৃণার জন্ম নিয়েছে। হয়তো এই কারণে বিক্ষুদ্ধ জনতা ইয়াবা গডফাদারের বাড়িতে ভাঙচুর করেছে। তবে তাদের প্রতিপক্ষ বা দুর্বৃত্তরাও এধরনের কান্ড ঘটাতে পারে, সবকিছু খতিয়ে দেখা দরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাফরের বাড়ির সীমানা প্রাচীর, প্রধান ফটক, ঘরের দরজা, জানালা ও কক্ষের আসবাপত্র ভাংচুর করা হয়েছে। হামলার সময় ও পরবর্তী সময়ে এ বাড়ির কোন সদস্য ছিলনা বলে জানা যায়।
লেঙ্গুরবিল গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, টেকনাফে ইয়াবা বিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে জাফর আহমদ ও তার ছেলে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়াসহ পরিবারের সদস্য এলাকায় অবস্থান করলেও মাস দুয়েক আগে পালিয়ে আত্মগোপন করেছে। বর্তমানে তার দুই তলা আলিশান বাড়িতে কেউ থাকেনা। এই অবস্থায় রাতের আঁধারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটেছে, আমরা সকালে দেখেছি।
প্রসঙ্গত, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা গডফাদার। ইয়াবা গডফাদারের তালিকায় তার তিন ছেলে সদর ইউপির চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া, দিদার মিয়া ও মোঃ ইলিয়াছের নাম রয়েছে। এরমধ্যে, দিদার মিয়া গত ১৬ ফেব্রুয়ারী ১০২ জন ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পন করেছেন।
সাবেক এই উপজেলা চেয়ারম্যান একসময় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি পৌর বিএনপির সভাপতি ছিলেন। ওই বছর জাতীয় নির্বাচনে নিজ দলের বিপক্ষে আব্দুর রহমান বদির জন্য কাজ করেন বলে জনশ্রুতি আছে। পরবর্তী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তৎকালীন সাংসদ আব্দুর রহমান বদির হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর আওয়ামীলীগের দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
বরাবরই জাফর আহমদ ও তার ৩ ছেলের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমে কোটি টাকা উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্র মো. রাশেদ জানিয়েছেন, ২০০৩ সালে বাড়িটি বাবা জাফর আহমদ নির্মাণ করেছেন। ওই সময় তো ইয়াবা ছিল না। কেন ইয়াবার অজুহাতে আমার বাবার কষ্টার্জিত বাড়িতে ভাঙচুর করছে পুলিশ। তা আমার বোধগম্য নয়।