বিশেষ প্রতিনিধি, টেকনাফ :
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী (লেদা) ভারপ্রাপ্ত বন বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরিবেশ আইন অমান্য করে বন বিভাগ ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় কিছু বনখেকু লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে উক্ত বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা আবদুল মালেক মুন্সি মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে বন বিভাগের জমিতে অবৈধ বাড়ি নির্মাণ, মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি, বনায়ন ধ্বংস করে এক ইয়াবা গডফাদারকে মাটি কাটার সুযোগ ও লেদার রোহিঙ্গা বস্তি এবং তার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় বন বিভাগের জমিতে দোকান নির্মাণ করে দৈনন্দিন টাকা উত্তোলন, ভাড়া বাসা নির্মাণের সুযোগ করে দিয়ে রোহিঙ্গা লোকজনকে ভাড়া দেওয়া সহ বিভিন্নভাবে বন বিভাগের পরিবেশ ধ্বংস করে চলেছে খোদ বন কর্মকর্তা নিজেই।
সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২ সপ্তাহ ধরে লেদা মৌলভী পাড়া এলাকায় স্থানীয় মতিউর রহমান প্রকাশ মতি উল্লাহর পুত্র ইয়াবা গডফাদার আবদুল মালেক বন বিভাগের জমিতে নিজে দালান বাড়ী নির্মাণের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বনের হাজার হাজার গাছ ধ্বংস করে মাটি কেটে বন বিভাগের জমি দখল করছে বলে খবর পেয়ে শরীর জমিন গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে উক্ত অসাধু বিট কর্মকর্তা আবদুল মালেক মুন্সিকে জানালে সে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়ে ২ সপ্তাহ সময় ক্ষেপন করে।
এরপরও মাটিকাটা অব্যাহত রাখলে বিষয়টি নিয়ে সচিত্র সংবাদ তৈরি করা কালে গত ০২ মে আবদুল মালেক মুন্সির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সে উল্টো সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীকে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ লিখলে নিজের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দিয়ে মুঠোফোন কেটে দেয়।
কিছুক্ষণ পর পুনরায় ফোন ব্যাক করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটছে বলে জানায়।
বন বিভাগের জমিতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার আছে কিনা জানতে চাইলে স্থানীয় এম.পি. চেয়ারম্যানরা সবকিছু পারে বলে আবারও ফোন কেটে দেয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এইচ.কে. আনোয়ার সিআইপি বলেন- বন বিভাগের জমিতে কাউকে বন কাটা ও মাটি কাটার অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই এবং আমি কাউকে অনুমতিও দিই নাই। যদি কেউ আমার নাম ভেঙ্গে কোন কিছু করে তাহলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনের ব্যবস্থা নেওয়ার জোর সুপারিশ করছি।
এ ব্যাপারে উক্ত অসাধু বিট কর্মকর্তা আবদুল মালেক মুন্সির বিরুদ্ধে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে লেদা নুর আলী পাড়া এলাকায় আবুল বশরের স্ত্রী নুর নাহার, হাজী নুর আলীর পুত্র হাছন, আবদুল কাদেরের পুত্র নুরুল ইসলাম ও মৃত ছৈয়দুর রহমানের পুত্র নবী হোছনসহ অসংখ্য লোকজনকে বন বিভাগের জমি বিক্রি করার মত করে ঘর বাড়ী নির্মাণ করার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও লেদা শিয়াইল্যাঘোনা এলাকার বনের পাহাড় কেটে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি ও লেদা রোহিঙ্গা বস্তি এলাকায় বন বিভাগের জমিতে শত শত দোকান ঘর নির্মাণ করে দোকানপাট খোলার সুযোগ করে দিয়ে স্থানীয় কিছু লোকজনকে ব্যবহার করে প্রতি দোকান থেকে দৈনন্দিন ২০ টাকা করে উত্তোলন করে পকেটস্থ করছে।
তাছাড়া বন বিভাগের জমিতে ভাড়া বাসা নির্মাণের সুযোগ দিয়ে মোটা অংকের বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের ভাড়া দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়টি সরজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে মাটি কাটার সাথে সংশ্লিষ্ট ইয়াবা গডফাদার আবদুল মালেকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন- “তোমার যতদূর সাহস আছে, ততদূর লিখ। তাতে আমার কিছু আসে-যায় না”।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের এসিএফ মোঃ সরওয়ার আলমর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।