টেকনাফে ইফার মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্র সমুহের বেহালদশা

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৬ years ago

হুমায়ূন রশিদ : বাংলাদেশ সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টেকনাফে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্র সমুহ তদারকির অভাবে বেহাল দশায় পড়েছে। এসব শিশু শিক্ষা কেন্দ্র সমূহ যে নিয়োজিত শিক্ষকরা পাঠদানে নিয়মের তোয়াক্কা না করায় কোরআন শিক্ষা ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।এরফলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পরিচালিত মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্য্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় অভিভঅবকসহ সচেতনমহল শংকা প্রকাশ করছেন।
জানা যায়, টেকনাফের ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫৪টি প্রাক-প্রাথমিক, ৫৫টি সহজ কোরআন শিক্ষা ও ১টি বয়স্ক শিক্ষাসহ ইফার মোট ১১০টি শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্র সমুহের মধ্যে গুটি কয়েক কেন্দ্র সঠিক নিয়মে চললেও বেশীর ভাগ কেন্দ্র সমুহে নিয়োজিত শিক্ষকদের মনগড়া নিয়মে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকেরা এসব শিক্ষা কেন্দ্রের পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর চাকুরীতে সম্পৃক্ত হওয়ায় উপজেলার রঙ্গিখালী কেন্দ্রীয় মসজিদের ফরিদুল আলম জিহাদীসহ হ্নীলা, মৌলভী বাজার, লম্বাবিল, মারিশ বনিয়ার সাইয়্যেদ উল্লাহ, পৌর এলাকার মোশতাক ও শাহপরীর দ্বীপের আব্দুস শুক্কুরের কেন্দ্রে এই দূরাবস্থা বলে অভিভাবক এবং সচেতনমহলের পক্ষ থেকে অভিযোগ। এদিকে কেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় গৃহীত নীতিমালাকে অনুসরণ না করেই প্রায় শিক্ষক এসব শিক্ষা কেন্দ্রসমূহ পরিচালনা করছেন। রঙ্গিখালী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কেন্দ্রের একাধিক অভিভাবক জানান,আমাদের শিশুরা প্রতিদিন শুধুশুধু কেন্দ্রে সকাল ৭টায় আসে আর ৮টায় যায়। এই কেন্দ্রের শিক্ষক ফরিদুল আলম জিহাদী ব্যস্ততার কারণে মাসে দু’য়েক বারও পড়ানোর সুযোগ পায়না বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি পাশর্^বর্তী একটি মাদ্রাসায় চাকুরীর সুবাধে পুরো বছরই এমতাবস্থায় থাকেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে শিক্ষক অভিযুক্ত ফরিদুল আলম জানান, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।
এই ব্যাপারে ইফার টেকনাফ সুপার ভাইজার নুরুল ইসলাম সরকার, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্রের দূরাবস্থার সত্যতা স্বীকার করে জানান,আমি কর্মস্থলে সদ্য যোগদান করেছি। ইফার এই প্রকল্পের অভিযুক্ত শিক্ষকদের ইতিমধ্যে মৌখিকভাবে সর্তক করা হয়েছে। শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইফার জেলা সহকারী পরিচালক সরোয়ার আকবর জানান, বিভিন্ন সুত্রে টেকনাফ পরিচালিত মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্রের ব্যাপারে অবগত হয়েছি। কেন্দ্র ব্যবস্থাপনায় কোন ধরণের অনিয়ম বা গাফেলতি পাওয়া গেলে কেন্দ্র শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইফা প্রকল্পের মনিটরিং কমিটির সভাপতি মোঃ রবিউল হোসেন বলেন, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কেন্দ্রের কার্য্যক্রম যেন সুষ্ঠুভাবে চলমান থাকে সে জন্য আমি প্রকল্প সুপার ভাইজারসহ সংশ্লিষ্টদের নিদের্শনা প্রদান করেছি। কোন ইমাম বা শিক্ষক সরকারের মহৎ এই প্রকল্প কার্যক্রমে অসহযোগিতামূলক আচরণ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে নতুনভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।