মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী, টেকনাফ :
টেকনাফ সীমান্ত উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পাহাড় সংলগ্ন রংগীখালী একটি ক্রাইম জোনে পরিনত। এটি ডাকাত ও ইয়াবার স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত। এখানে ইয়াবার কারবারিরা মাদকের স্বার্থে পেশাদার ডাকাতদের লালন পালন করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে । কেননা মিয়ানমার থেকে মাদকের চালান নাফ নদী এবং পাহাড়ে মওজুদ ও ব্যবসা করতে হলে অস্ত্রধারী ডাকাতের প্রয়োজন। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে কারবারীদের কালোটাকার পেশি শক্তির দাপট ও আধিপত্য চলে।
হ্নীলা রংগীখালী এলাকা সংলগ্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থাকায় এখানে নানা অপরাধ প্রবনতা সৃস্টি হয়। বিশেষ করে চুরি, ডাকাতি, অপহরন, মানব পাচার, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোন অপরাধ প্রবনতা নেই, যাহা রোহিঙ্গা কর্তৃক হয় না। অতীতে রংগীখালী এলকায় মাদক দাপট ডাকাতের উৎপাত এবং তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে খুনা খুনি পর্য্যন্ত হয়েছিল। পাহাড় সংলগ্ন থাকার কারণে বিভিন্ন অপরাধ কর্মের সাথে ডাকাতেরা পাহাড়ে আশ্রয় নেয়।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে এ তথ্য জানায়, তথ্য মতে স্থানীয় গাজী পাহাড় ও গভীর অরণ্যে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা ডাকাতেরা গড়ে তুলেছে ডাকাতের আস্থানা । এখানে জ্বলে ও স্থলে ডাকাতী অপহরন মাদক পাচার ও ব্যবসা সহ নানা অপরাধ প্রবনতার ঘাটি । বিশেষ করে মাদক বিরুধী অভিযান এবং বন্দোকযুদ্ধ চলমান থাকায় স্থানীয় ও রোহিঙ্গা আলোচিত ডাকাতেরা পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে গিয়ে আস্থানা গেড়েছে। এছাড়া ওদের সাথে যোগ দিয়েছেন পলাতক ইয়াবা কারবারীরাও। বর্তমান রংগীখালী গাজী পাহাড় ও তৎসংলগ্ন গভীর আরণ্য এখন ডাকাত ও ইয়াবা কারবারীদের মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। মাঝে মধ্যে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে যাওয়ার পূর্বে ওদের পাহারাদারেরা মোবাইল করে বলে দিলে ওরা তাদের গড়া আস্থনায় আশ্রয় নেই । ফলে ওরা আইন শৃংখলা বাহিনীর আটক থেকে রেহায় পায়।
সূত্র আরো জানায় এই রংগীখালী গাজী পাহাড় ও আরণ্যে আশ্রয় নেয়া স্থানীয় ও রোহিঙ্গা নামকরা ডাকাতেরা উখিয়া টেকনাফের ৩৪ টি আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের চলে রামরাজত্ব ও আধিপাত্য। মহেশখালী পাহাড়ে আশ্রিত ডাকাত এবং অস্ত্র তৈরী কারক ডাকাতেরা আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পনের পর টেকনাফের গাজী পাহাড়টি বনে গেল মহেশখালীর মতো ২য় ডাকাতের ঘাটি। অপরাধ জগতের নানা অপকর্ম এখান থেকে নিয়ন্ত্রিত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বিষয়টি অবগত থাকলেও স্থানীয় আইন শৃংখলা বাহিনীর দৃশ্যমান কোন অভিযান না থাকায় গাজি পাহাড় ঘাটিটি ক্রমশঃ বিস্তার লাভ করছে। পরিস্থিতি জটিলের পূর্বে এটির বিরুদ্ধে চিরুনী অভিযান পরিচালনা করার দাবী উঠেছে সচেতন মহলের ।
অনুসন্ধান জরীপের ভিক্তিতে জানা যায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে টেকনাফ পৌরসভার ১ ও ২ নং ওয়ার্ড সহ পুরাতন পল্লান পাড়া, নাইট্যং পাড়া, টেকনাফ সদর জাহালিয়া পাড়া, কেরুনতলী, হ্নীলা, আলীখালী, রংগীখালী, পানখালী, হোয়াইক্যং ঝিমংখালী ও কাঞ্জরপাড়া পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারি লোকেরা ডাকাত আতংকে ভোগছে । সন্ধা ঘনিয়ে আসার পর গাজী পাহাড়সহ গভীর আরণ্যে প্রস্তুতি চলে ডাকাতি, অপহরন ও অস্ত্রের মহড়া।
উখিয়া টেকনাফের পাহাড়ের পাদদেশে ৩৪টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোর বেশীর ভাগ ক্যাম্প ইয়াবা, মানবপাচার ও অস্ত্ররের রমরমা এবং নানা অপকর্মের প্রশিক্ষন চলে । ইয়াবা ও মানব পাচারের নিরাপদ রুট হচ্ছে এ পাহাড় । একাদিক সিন্ডিকেট মিলে ইয়াবার চালান হাতবদল হয়ে সরাসরী নৌ-পথে এবং স্থল পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হয়ে যাচ্ছে ।
টেকনাফ উপজেলা মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় পাহাড়ে দস্যূতা সংক্রান্তে বিষয়ে একাধিকবার আলোচনা করা হলেও সিদ্ধান্তে এখনো পৌছেনী সংশ্লিষ্ঠরা।
এদিকে ২১শে জুলাই টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রঙ্গিখালীতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ ২ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে। এ প্রসংশনীয় অভিযানকে এলাকাবাসী বিজিবি সাধুবাধ জানিয়েছে।