সোলতান আহমদ মুক্তিযোদ্ধা : পরাধীন ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসন শোষণের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন যখন বেশ দানা বেঁধে উঠেছে তখনই জন্মগ্রহণ করেন মহাকালের মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সময় ভারতের সকল প্রদেশের মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষ কোনো না কোনোভাবে সে সংগ্রামে শরিক হয়ে পড়েছে এবং তাতে সম্পৃক্ত হতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ, বাংলা ও তখন পিছিয়ে ছিল না, বরং সমগ্র ব্রিটিশ শাসিত ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামে বাঙালিরই ছিল অগ্রণী ভূমিকা। বাংলার এই সংক্ষুদ্ধ রাজনৈতিক পরিবেশেই যে পরিবারে শেখ মুজিবুরের জন্ম তা শেখ পরিবার হিসেবেই সমগ্র অঞ্চলে পরিচিত।
টুঙ্গিপাড়া শেখ পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা হলেন- শেখ জহির উদ্দিন, তার পিতার নাম ছিল শেখ আবদুল আউয়াল, শেখ আবদুল আউয়াল ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের অষ্টম পূর্ব পুরুষ। টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারের একটি পাকা বাড়ি তৈরি হয় ১৮৫৪ সালে।
শেখ জহির উদ্দিন আড়তদারী ব্যবসায় করতেন কলকাতায়। কোন্দা পাড়া গ্রাম থেকে কলকাতায় যাতায়ত করা অসুবিধাজনক হওয়ায় তিনি কলকাতার বেলেঘাটা অঞ্চলে বাসা নিয়ে সেখানে সপরিবারে বসবাস করতেন। শেখ জহির উদ্দিনের পুত্রের নাম শেখ জান মাহমুদ, শেখ জান মাহমুদের পুত্র শেখ বোরহান উদ্দিনের জীবনকাল পর্যন্ত উক্ত আড়তদারী ব্যবসা টিকে ছিল।
শেখ বোরহান উদ্দিন ব্যবসায়ের কাজে এক সময় কলকাতা থেকে মধুমতি নদী তীরের গিমাডাঙ্গা ও ঘোপের ডাঙ্গায় আসেন। তিনি কলকাতায় আর ফিরে যাননি। তিনি টুঙ্গিপাড়ার কাজী পরিবারে বিয়ে করেন এবং টুঙ্গিপাড়াতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। এই বোরহান উদ্দিনই টুঙ্গিাপাড়ার শেখ পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা এবং তার পরিবারই টুঙ্গি পাড়ার শেখ পরিবার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
শেখ বোরহান উদ্দিনের তিন পুত্র শেখ একরাম, হোসেন, শেখ তাজ মাহমুদ এ শেখ কুদরত উল্লাহ ওরফে কুদু শেখ। শেখ বোরহান উদ্দিনের বড় ছেলে শেখ একরাম হোসেনের ও তিন পুত্র শেখ আবদুল মজিদ, শেখ আবদুল হামিদ এবং শেখ আবদুর রশিদ ওরফে নসু মিয়া। এ তিন ভাইয়ের মেজো ভাই শেখ আবদুল হামিদই হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দাদা অর্থাৎ শেখ লুৎফর রহমানের বাবা।
আবার শেখ মুজিবের মা সায়রা খাতুন ছিলেন শেখ লুৎফুর রহমানের বড় চাচা শেখ আবদুল মজিদের কন্যা অর্থাৎ শেখ মুজিবুর রহমানের মা ছিলেন বাবা শেখ লুৎফুর রহমানের চাচাতো বোন। শেখ মুজিবুর রহমানের বাবা শেখ লুৎফুর রহমান পেশাগত জীবনে ছিলেন দেওয়ানী আদালতের একজন সেরেস্তাদার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত তার জমি জমাও ছিল প্রায় শতাধিক বিঘা। তাদের পরিবারে প্রাচুর্য ছিল না, ছিল স্বচ্ছতা। নিজের জমির যে পরিমাণ ফসল তার গোলাঘরে উঠতো তা দিয়ে সারা বছরই স্বচ্ছন্দে চলে যেত। শেখ লুৎফুর রহমানের ০৬ সন্তান। তারা হলেন যথাক্রমে ফাতেমা বেগম, আছিয়া বেগম, শেখ মুজিবুর রহমান, আমেনা বেগম, খোদেজা বেগম লিপি এবং শেখ আবু নাসের। দেখলেতো বন্ধুরা বঙ্গবন্ধুর পরিবার কত ঐতিহ্যবাহী ছিল।
পরিশ্রম আঘাত আর ত্যাগেই যার জীবন
সোলতান আহমদ
মুক্তিযোদ্ধা (মুজিব বাহিনী)
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ
হ্নীলা ইউনিয়ন শাখা, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল ঃ ০১৮৬৬ ৪৬৪১০৬