ছাত্রলীগের পদ হারালেন শোভন-রাব্বানী : ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়-সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

অনলাইন :
ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ হারালেন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী।

শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সংগঠনের ১ নম্বর সহ-সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় এবং ১ নম্বর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়।

কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ ১ বছর না পেরোতেই তাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতাসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কথা ওঠে আসে।

এর মধ্যে স্বেচ্ছাচারিতা, অদক্ষতা ও অদূরদর্শিতা, নেতাকর্মীদের প্রত্যাশিত মূল্যায়ন না করা অন্যতম। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপেক্ষা, ফোন রিসিভ না করার অভিযোগও আছে।

এর বাইরে রাতজাগা ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা, কর্মসূচিতে বিলম্বে যাওয়া, প্রধান অতিথিদের বসিয়ে রাখা, জেলা সম্মেলন করতে না পারা, বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি গঠনের বিষয়ও এ তালিকায় রয়েছে।

এসব দেখে এবং শুনে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শনিবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিতে বলেন। সেদিন দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তারা বলেন, শেখ হাসিনা ভীষণ ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের ওপর। ‘আমি ছাত্রলীগের এমন নেতা চাই না, যাদের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পর্যন্ত উঠেছে’- এমন ক্ষুব্ধ মনোভাবও সেদিন প্রকাশ করেন দলীয় সভাপতি।

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রথম সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সংগঠনটির প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জানা গেছে, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলী খানের ছেলে আল নাহিয়ান খান জয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাবার হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন তিনি।

বরিশাল জিলা স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। এসএসসি পাস করে ঢাকা কমার্স কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন জয়। উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন আল নাহিয়ান খান জয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেন। এর পরপরই তার ডাক আসে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে নিজের অবস্থান সৃষ্টি করে নেন জয়। জয় ঢাবি’র ভর্তি পরীক্ষার মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান লাভ করেছিল বলে জানা যায়।

বর্তমানে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। সাহসিকতা নিয়ে হরতাল প্রতিরোধ এবং পিকেটারদের ককটেল বোমাসহ ধরিয়ে দেয়ায় ২০১৫ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পুরস্কার লাভ করেছিল সে।

অপরদিকে লেখক ভট্টাচার্য্যের গ্রামের বাড়ি যশোরের মনিরামপুরে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন