চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৯৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪০ প্রিসাইডিং অফিসারকে ম্যানেজের অভিযোগ আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর

লেখক: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৬ years ago

নিজস্ব প্রতিবেদক,চকরিয়া : কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ ১৮ মার্চ সোমবার। কিন্তু এই নির্বাচনে উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৯৯টি কেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৪০ কেন্দ্রকে বাছাই করে ভোট কারচুপির প্রস্তুতি চুড়ান্ত করা হয়েছে সরকার দলের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের গিয়াস উদ্দিনের পক্ষ থেকে। বিশেষ করে এসব কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলীয় মদদপুষ্ট ছাড়াও বিশেষ একটি সম্প্রদায়ের প্রিসাইডিং অফিসারদের মাধ্যমে এই ভোট কারচুপির নীলনকশা চুড়ান্ত করা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ করেছেন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্ধী আনারস প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী।
আনারস প্রতীকের প্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদী গতকাল রোববার বিকেল তিনটার দিকে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলমের নেতৃত্বে দলীয় প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন, পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী নির্বাচনে ভোট কারচুপির এই ষড়যন্ত্র করছেন। এজন্য তাদের পছন্দের লোকজনকে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। বিশেষ করে একটি সম্প্রদায়ের যাদেরকে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদেরকে ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগসহ নানাভাবে ম্যানেজ করা হয়েছে।
কোন পন্থায় এই ভোট কারচুপি করতে পারে, এমন প্রশ্নে ফজলুল করিম সাঈদী অভিযোগ করেন, ভোটকেন্দ্রের প্রধান দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন প্রিসাইডিং অফিসার। মুলত তার কক্ষেই হেফাজতে থাকবে ব্যালট পেপারগুলো। সেই গোপন কক্ষ থেকে রাতেই প্রিসাইডিং অফিসার ব্যালটে সিল মেরে রেখে দেবেন। এর পর সেই ভোটও কাস্ট দেখিয়ে কেন্দ্রের মধ্যেই ফলাফল পাল্টে ফেলার চুড়ান্ত চক্রান্ত করা হয়েছে।
কোন কোন কেন্দ্রে এই কারচুপি করা হতে পারে সেসব কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারদের তালিকা দিয়ে ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, আমি জানি নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন এই নির্বাচনকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন। এতে আমি খুবই খুশি। কিন্তু প্রশাসনের অগোচরে এমপি, মেয়র ও দলীয় প্রার্থী গিয়াসের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত প্রিসাইডিং অফিসারদের চুড়ান্তভাবে ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করে তাদেরকে বাধ্য করার চেষ্টা করবেন ভোট কারচুপিতে সহায়তা করতে। বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। তবে আমি বিশ্বাস করি, সকল ধরণের ষড়যন্ত্রকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে প্রশাসন এখানে একটি নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু ও সর্বমহলে প্রশংসিত একটি নির্বাচন উপহার দেবেন।
তবে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন রোববার দুপুরে চকরিয়া থানা চত্বরে কেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কোন অবস্থাতেই ভোট কারচুপির সুযোগ দেওয়া হবে না কাউকে। এক্ষেত্রে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কঠোর নজরদারির মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে। আর যত বড় প্রভাবশালী ব্যক্তি বা মাস্তান হউক না কেন কেন্দ্র দখল বা ব্যালটে হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে সাথে সাথে গুলি করতে হবে।