চকরিয়ায় ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এমপি জাফর ; মৃত্যুর পথযাত্রী রোগীদের রক্ত সংস্থানে মানুষের নির্ভরতার প্রতীক ব্লাড ডোনার সোসাইটি

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৪ years ago

এম.জিয়াবুল হক : চকরিয়ায় মৃত্যুর পথযাত্রী রোগীদের রক্ত সংস্থানের ব্যবস্থা করে মানতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্লাড ডোনার সোসাইটি। তিনবছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি ভালো কাজের মাধ্যমে এতদাঞ্চলের গণমানুষের মাঝে আস্থা এবং নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তিনবছর পূর্তি উপলক্ষ্যে শনিবার সংগঠনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
চকরিয়া সরকারি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংগঠনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ৬২টি সংগঠনকে এবং চকরিয়া-পেকুয়া আসনের এমপি জাফর আলমসহ অতিথিদের সম্মাননা স্মারক হিসেবে ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়েছে।
চকরিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হারুণুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্য দেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আকম গিয়াস উদ্দিন, কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত ওসমান, লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছার, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবু মুছা, ডা. মোসলেহ উদ্দিন ফারুক রিয়েল, টিআইবি সদস্য জিয়া উদ্দিন, যুবলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম সোহেল, পিসফুল ইউনাইটেড কাবের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন চকরিয়া ব্লাড ডোনার সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা আজিজুল হক, উপদেষ্টা সাজিদ হোসেন সাকিব, সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন, এএইচএম রিদুয়ান, মিনারুল হক ছোটন, রিয়াজুল মোস্তফা রিয়াদ, হামিদ, শহীদ, ইব্রাহিম রাসেল, হেলাল উদ্দিন, এনামুল হক ছুট্টু, দিদারুল আলম।
প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য আলহাজ জাফর আলম বলেছেন, প্রত্যেক যুবককে আগামীর জন্য একেকজন করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ যে কোন আন্দোলন-সংগ্রামে যুবকেরাই ছিলেন অগ্রভাগে। তাই নতুন প্রজন্মসহ প্রত্যেক যুবককে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি মানুষের যে কোন সমস্যায় পাশে থাকার নামই হচ্ছে প্রকৃত মানবতা। আর সেই মানবতার ঝান্ডা নিয়ে দীর্ঘ তিনবছর পার করেছে চকরিয়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি। এজন্য আমি সংগঠনের প্রত্যেক সদস্যকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, একজন মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিয়ে যারা জীবন বাাঁচাতে এগিয়ে যান, তারাই হচ্ছে প্রকৃত মানবতাবাদী এবং মহামানব। অতএব প্রত্যেক যুববকে সেই মহা মানবতার কাজে শামিল হতে হবে। তাই যুবসমাজকে শপথ নিতে হবে, মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ইভটিজিংসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে দূরে রাখতে। তা হলেই সত্যিকার অর্থে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্লের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।
এমপি জাফর আলম আরো বলেন, বাংলাদেশে একশ্রেণির রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত যুবসমাজকে একসময় বিপথগামীতার পথে ধাবিত করেছিল মগজ ধোলাই করার মাধ্যমে। এ কারণে বিগত বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের আগুন সন্ত্রাসের সময় কিছু যুবক বিপদগামী হয়েছিল। তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যুবকদের জন্য চাকরি এবং আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয় যুবসমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে নানামুখী প্রযুক্তিবিষয়ক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। যার সুফল ইতোমধ্যে যুবসমাজ পাচ্ছেন।
চকরিয়া ব্লাড ডোনার সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা আজিজুল হক জানান, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে চকরিয়া ব্লাড ডোনার সোসাইটি তৃতীয় বর্ষ পার করেছে। এই তিনবছরে সংগঠনের প্রত্যেকটা সদস্য চেষ্টা করেছে রক্ত দিয়ে মানুষের পাশে থাকতে। তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ৬২টি সংগঠনকে সম্মাননা স্মারক হিসেবে ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রদান করা হয় এমপি জাফর আলমসহ অতিথিদের।
আজিজুল হক জানান, শনিবার সকাল দশটায় চকরিয়া পৌরশহরের সিস্টেম চকরিয়া কমপ্লেক্সের সামনে থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালী। র‌্যালিটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে চকরিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয় এবং বর্ষপূর্তির মূল অনুষ্ঠানে শামিল হয়। এ সময় সংগঠনের পতাকা, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়।##