এম.জিয়াবুল হক : চকরিয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিজ জমিতে ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে ভাড়াটে দূর্বৃত্তের দাবীকৃত দুই লাখ টাকা দিতে অস্বীকার করায় হামলায় একই পরিবারের একজন নিহত ও নারীসহ ৬ জন আহত হয়েছেন। নিহতের নাম আবু হানিফ মানিক (২৮) তিনি চকরিয়া উপজেলার পূর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের কাছিম আলী মিয়াজী সিকদার পাড়া গ্রামের মৃত নুরুল হোসেনের ছেলে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে হামলায় পরিবারের সাত সদস্যের সাথে তিনি আহত হন।
ঘটনার পর তাকে প্রথমে স্থানীয় চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এদিন বিকাল ৪টায় চমেক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নিহত আবু হানিফ মানিক ছাড়াও তাঁর অপর দুই বড় ভাইকেও ইতিপূর্বে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। তৎমধ্যে মানিকের বড় ভাই ইব্রাহীমকে ১৯৯৮ সালে ও মেঝ ভাই আবু তাহেরকে ২০১৩ সালে খুন করে দূর্বৃত্তরা। মৃত নুরুল হোসেনের ৫ সন্তানের মধ্যে তিনজন (তিনভাই) খুনের শিকার হয়েছে।
শনিবারের হামলায় আহতরা হলেন, নিহত মানিকের ভাই আবু তৈয়ব (৩৫), আবু ছিদ্দিক (৩০), ভাতিজা কাইছার হামিদ (২৩), আবদুস সালাম (৪৫), সাহেদ (১৩) ও তছলিমা (৩০)। আহতদের মধ্যে তৈয়বকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও অপর পাঁচজনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে হামলা ও হত্যায় জড়িত অভিযোগে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আটক তিনজন হলেন একই এলাকার মৃত নজু মিয়ার ছেলে কবির আহমদ (৫০), নুরুল আমিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৩০) ও তার ভাই স্কুল শিক্ষার্থী মো. সাগর (২৫)। আটকদের মধ্যে কবির আহমদ নিহত আবু হানিয়ের বড় ভাই ইব্রাহীম হত্যা মামলারও ২নম্বর আসামী।
আক্রান্ত পরিবার সদস্যদের অভিযোগ, চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলার সিকদার পাড়াস্থ নিজ জমিতে ঘর তুলছিলেন আবু হানিফ। ঘর তুলতে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন স্থানীয় একটি দূর্বৃত্ত চক্র। অবশ্য চাঁদাদাবির পেছনে দুর্বৃত্ত চক্রকে উৎসাহ দেন জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকা প্রতিপক্ষের লোকজন। সর্বশেষ শনিবার চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানো হলে ক্ষুদ্ধ হয়ে ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায় স্থানীয় মৃত নুরুল হোসেনের পরিবারের উপর।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, হামলার সময় মাতামুহুরী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই হাবিবের নেতৃত্বে একদল পুুলিশ উপস্থিত থাকলেও ভুমিকা ছিল রহস্যজনক। অবশ্য ঘটনার পর বিকালের দিকে আহত যুবক হানিফ মারা গেলে সংবাদ পেয়ে পুলিশ চকরিয়া হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা প্রতিপক্ষের তিনজনকে আটক করেছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনা শোনা মাত্রই অভিযান চালিয়ে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদেরও আটক করতে অভিযান চলছে। তবে রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনাটি নিয়ে মামলা হয়নি।
ওসি বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে শুনেছি, এরআগে নিহত আবু হানিফ মানিকের দুই ভাইকেও হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।