চকরিয়ায় মোটর সাইকেল থামিয়ে পৌর যুবলীগ সভাপতি সহ দুইজন কে কুপিয়ে জখম, শহরে উত্তেজনা

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৮ মাস আগে

সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের কমিটি নিয়ে বিরোধ জেরে হামলার ইঙ্গিত
এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন (৩৬) ও যুবলীগ নেতা বেলাল উদ্দিন কামরানকে মোটর সাইকেল থামিয়ে  (২৮) কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। হামলার সময় সন্ত্রাসীরা দুইজনের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো দা ও কিরিছ দিয়ে আঘাত করেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গুরুতর আহত দুইজনকে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ও পরে  চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  প্রেরণ করা হয়েছে।
 গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ফায়ার সার্ভিস এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে বর্তমানে চকরিয়া পৌরশহরে থমথমে বিরাজ করছে। ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবিতে রাতে চকরিয়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
আহতদের পরিবার সদস্যরা তাৎক্ষণিক অভিযোগ করেছেন, সোসাইটি বায়তুল মাওয়া শাহী জামে মসজিদের কমিটি নিয়ে বিরোধ জেরে এ হামলার ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে।
হামলার শিকার চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন পৌরসভার  ৪নং ওয়ার্ডের ভরামুহুরীর মৃত মোহাম্মদ হোছাইনের ছেলে ও আহত যুবলীগ নেতা বেলাল উদ্দিন কামরান পৌরসভার  ৮নং ওয়ার্ডের মাষ্টারপাড়ার নুর মোহাম্মদের ছেলে।
আহত যুবলীগ নেতা হাসানগীর হোছাইনের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা  আলমগীর হোছাইন জানান, এদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাসানগীর হোছাইন তার মোটরসাইকেল নিয়ে ভরামুহুরীস্থ বাড়ি থেকে চিরিঙ্গা সদরে যাচ্ছিলেন। হাসানগীর চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা সড়কের ফায়ার সার্ভিসের সামনে পৌছলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা চিহিৃত ৪-৫জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার পথ গতিরোধ করে।
ওইসময় তাকে কেন পথ গতিরোধ করা হয়েছে জানতে চাইলে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে জখম করে। তার মাথায় কুপানোর কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে জানান তিনি। এসময় তার শোর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়েন। সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় তার মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও পকেটে থাকা টাকাও লুট করে নিয়ে যায়। ওইসময় সন্ত্রাসীরা যুবলীগ নেতা বেলাল উদ্দিন কামরানকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। পরে স্বজনরা তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এঘটনায় চকরিয়া পৌরশহরে দুইপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আহত পৌর যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন এর বড়ভাই জাহাঙ্গীর হোছাইন বলেন, আমার পুরো পরিবার আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। দলের জন্য আমার পরিবার সদস্যরা ত্যাগ শ্রম সবই দিয়েছি। কতিপয় একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করার জন্য একটি মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি সোসাইটি বায়তুল মাওয়া জামে মসজিদের কমিটি নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার পরিবার সদস্যদের নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছেন। এরআগেও  সন্ত্রাসীরা হাসানগীর এর উপর হামলা করেছে। এবারও তারা হত্যার উদ্দেশ্য একইভাবে হামলা করেছে।
চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম শহীদ বলেন, সোসাইটি বায়তুল মাওয়া জামে মসজিদের কমিটিতে আমাদের পক্ষে থাকা লোকজনকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। ওই ঘটনার জেরে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যুবলীগ নেতা হাসানগীর হোছাইন ও যুবলীগ নেতা বেলাল উদ্দিন কামরানের উপর হামলা করেছে  সন্ত্রাসীরা।
এদিকে চকরিয়া পৌর যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন ও বেলাল উদ্দিন কামরানকে হামলার প্রতিবাদে স্থানীয় এলাকাবাসী ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। তারা যুবলীগ নেতা হাসানগীর ও বেলাল উদ্দিনের উপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবী করেছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন,  পৌরসভা যুবলীগ সভাপতি হাসানগীর হোছাইনকে কিছু চিহিৃত সন্ত্রাসী হামলা করেছে। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। ##