গুলি করে সীমান্তে ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না..টেকনাফে বিজিবি অধিনায়ক

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

মোহাম্মদ শফি : টেকনাফে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার (২৬ জুন) সকালে শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায়
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিজিবি ২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে.কর্ণেল ফয়সাল হাসান খান বলেছেন, বিজিবির যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে ৭৪ কিলোমিটার সীমান্ত নিছিদ্্র করা সম্ভব নয়। তবে স্থানীয়রা সহযোগীতা করলে সীমান্ত নিছিদ্র করা সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এই জন্য তিনি বিজিবিকে তথ্য দিয়ে সহযোগীতার আহবান জানান।

আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন আমেরিকার মতো উন্নত দেশ, তাদের স্যাটেলাইট আছে, বিভিন্ন ধরনের সেন্সর আছে। তারপরও বর্ডার নিছিদ্র করতে পারেনি। মেক্সিকো থেকে মানুষ ঢুকে যায়, হেরোইনের চালান ঢুকে যায়। আমেরিকা বর্ডার নিছিদ্র করতে পারেনি। তবে আপনারা সহযোগীতা করলে বর্ডার নিছিদ্র করা সম্ভব।

তিনি বলেন আপনারা তথ্য দেন না। এ পর্যন্ত সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন ছাড়া কেউই বিজিবিকে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করেনি। সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় দেড় লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসাবে আমার খারাপ লাগে যখন আমার দেশের একটি প্রশিক্ষিত বাহিনীর গুলি আমার দেশের নাগরিকের বুকে চলে। আমি বিশ্বাস করি যে, গুলি করে আমার দেশের মানুষকে মেরে সীমান্তে ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না। ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করতে হলে সবার সহযোগীতা লাগবে, সবার সহযোগীতায় ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করা যাবে। যারা ইয়াবা ব্যবসায় কোটি কোটি টাকা লগ্নি করছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

দেশে ৭০ লাখ মাদকসেবী উল্লেখ করে বলেন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও যুবক ইয়াবাসক্ত হয়ে পড়েছে। মিয়ানমার ইয়াবা দিয়ে আমাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর মাদকের ব্যাপারে জিরোটলারেন্স ঘোষনা করেছেন সেই ঘোষনা অনুযায়ী মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।

রুট লেবেলে যারা পাচারকারী তাদেরকে মারতে পারি। কিন্তু দুই মাসে টেকনাফ সীমান্তে ২০লাখ ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। এইসব ইয়াবা আনার জন্য কারা টাকা দিয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে পারলে মাদক ব্যবসা বন্ধ হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আদিবুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম, পৌর মেয়র মো. ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাস, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সৌমেন মন্ডল প্রমুখ। অধ্যাপক সন্তোষ কুমার শীলের সঞ্চালনায় সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. শাহজাহান আলী। এতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার নারী-পুরুষ অংশগ্রহন করেন।

পরে প্রধান অতিথি উপস্থিত সকলকে মাদক বিরোধী শপথবাক্য পাঠ করান।