ক্ষোভে-অভিমানে দল ছাড়ছেন ৩২ বছর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা ইসলাম সিকদার!

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

সুবিধাবাদীদের ভীড়ে ঠাঁই হচ্ছেনা ত্যাগী নেতাকর্মীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম সিকদারের পদত্যাগ পত্র নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রবীণ এ আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগের ঘোষণায় অধিকাংশ নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট।

তাদের মতে, দলের দু:সময়ে সংগঠনের হাল ধরেছিলেন এই ইসলাম সিকদার। দলকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী ও সংগঠিত করার জন্য তিনি জীবনের অর্ধেক সময় ব্যয় করেছেন। কিন্তু দল টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলেও দল থেকে কোন সুবিধা নেননি। উল্টো দল বিরোধী ব্যক্তিদের দ্বারা বার বার অবহেলার শিকার হয়েছেন। তবে ইউনিয়নের ক্ষুদ্র একটি অংশ তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তে মনে মনে খুশি বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি দলের সিনিয়র নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতা, বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালনে বাধাঁ ও তালিকাভূক্ত মাদক সম্রাট কে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে নেত্রীকে বিতর্কিত করার অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রবীণ নেতা সিরাজুল ইসলাম সিকদার।

তিনি দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে বিভিন্ন মেয়াদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। প্রবীণ এ আওয়ামী লীগ নেতা টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বরাবরে দেয়া পদত্যাগ পত্রে লেখেন, পারিবারিক ভাবে তিনি আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের লোক। পরিবারে তিনি সহ চার ভাই মুক্তিযোদ্ধা। বাবা মরহুম নুর আহমেদ সিকদার ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও সংগঠক।

কিন্তু দু:খের বিষয়, এখন বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার আদর্শে দল পরিচালিত হচ্ছে না। বরং ব্যক্তি স্বার্থে দল কে ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য নির্ভর হয়ে পড়ায় প্রাণের দল সঠিক তথা গঠনতন্ত্র মতে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ জন্য তিনি বাধ্য হয়ে দলের গুরু দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন।

পদত্যাগ পত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামীলীগের কিছু স্বার্থান্বেষী নেতা কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী পালনে বাধাঁ ও জেলার কিছু সিনিয়র নেতা বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে রাষ্ট্রের তালিকাভূক্ত মাদক সম্রাট কে দলীয় মনোনয়ন পেতে সুপারিশ করে নেত্রী কে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। চোখের সামনে এতো অনিয়ম তিনি মেনে নিতে পারছেন না বলেই দল ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

যোগাযোগ করা হলে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম সিকদার জানান, সাধ্যের সবটুকু দিয়ে দীর্ঘ ৩০বছর হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন তিনি। ১৯৯১ থেকে বিভিন্ন মেয়াদে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দুঃসময়ে দলের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু দল ক্ষমতায় থাকায় এখন বসন্তের কোকিলের অভাব নেই। আর আমাদের মতো ত্যাগী মানুষেরও কোন মূল্যায়ন নেই। তাই তিনি দলের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।

তার পদত্যাগ পত্র পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ স¤পাদক আলহাজ¦ নুরুল বশর জানান, তিনি কিছু নেতাকর্মীদের আচরণে কষ্ট পেয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সভায় পদত্যাগপত্র গৃহিত হলেই কেবল তা কার্যকর হবে।