নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ১৭ অক্টোবর ২০২২ অনুষ্ঠিতব্য কক্সবাজার জেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা পরিষদের সাবেক নির্বাচিত সদস্য চকরিয়া উপজেলার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব লায়ন কমর উদ্দিন আহমেদ।
গতকাল বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে লায়ন কমরউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। একইদিন দুপুরে তিনি সভানেত্রীর দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এসময় তারসঙ্গে সেখানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ এবং শুভ্যানুধায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
লায়ন আলহাজ কমরউদ্দিন আহমদ রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেবামুলক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের গুরুত্বপুর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি চট্টগ্রামস্থ চকরিয়া সমিতির তিনবার নির্বাচিত সভাপতি। বর্তমানেও তিনি চট্টগ্রামে বসবাসরত চকরিয়াবাসির বৃহত্তর এ সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন।
২০১৬ সালের ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চকরিয়া উপজেলার (হারবাং বরইতলী কৈয়ারবিল ও বিএমচর) ওয়ার্ড থেকে বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি দায়িত্বপালনকালীন সময়ে নির্বাচনী এলাকায় জেলা পরিষদের অর্থায়নে ব্যাপক উন্নয়নকর্মকাণ্ড সাধিত করেন। এলাকার রাস্তা-ঘাটের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নে তিনি যতেষ্ট ভুমিকা রেখেছেন।
করোনাকালীন সময়ে তিনি জেলা পরিষদের অর্থায়ন এবং ব্যক্তিগত তহবিলের উদ্যোগে চকরিয়া উপজেলা ছাড়াও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন জনপদে কর্মহীন গরীব মানুষের হাতে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। বিভিন্ন জনপদে মানুষের মাঝে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করেছেন। আবার বন্যা-দুর্যোগমুহুর্তে তিনি দুর্গত এলাকায় নৌকাবোট নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বানবাসি মানুষের মাঝে রান্নাকরা খাবার ও শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। একইসঙ্গে বিতরণ করেছেন ওষুধ সামগ্রীও।
প্রতিবছর ঈদ-প্লাবনে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ হয়ে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে গরীব মানুষের জন্য নতুন কাপড় উপহার দিয়েছেন। গরীব মানুষের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। এভাবে তিনি চকরিয়া কক্সবাজারে জনসেবায় অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।
জনসেবার পাশাপাশি লায়ন আলহাজ কমরউদ্দিন আহমেদ রাজনীতির মাঠে সর্বদা সক্রিয় রয়েছেন। কক্সবাজার জেলার আওয়ামী রাজনীতির অঙ্গনে তিনি একজন পরিচ্ছন্ন ও জনবান্ধব নেতা হিসেবে সর্বমহলে প্রশংসিতও হয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের সকলপর্যায়ের নেতাকর্মী তাকে রাজনীতিতে সাদা মনের মানুষ হিসেবে জানেন।
অবশ্য তাকে এতদুর আসতে নানা চড়াই-উৎড়াইও অতিক্রম করতে হয়েছে। তিনি বিএনপি জামায়াত জোট আমলে ব্যাপক নির্যাতনের শিকারও হয়েছিলেন। কারণ তিনি সেইদিন ২৮ অক্টোবর লগিবৈটা আন্দোলন ঠেকাতে গ্রামের বাড়ি চকরিয়া উপজেলার বরইতলীতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে শক্তিশালী প্রাচীর তৈরী করেছিলেন। আবার সেই প্রাচীর ভেঙ্গে বিএনপি জোটের লোকজন গুলি করতে করতে সামনে অগ্রসর হতে চাইলে বাঁধা হয়ে দাঁিড়য়েছিলেন লায়ন কমরউদ্দিন আহমেদ। সেইকারণে তাকে মাশুলও দিতে হয়েছে অনেক। বিএনপি জোটের স্বশস্ত্র লোকজন সেইদিন চকরিয়া সদরে আসতে বাঁধা দেওয়ায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি চালিয়ে গুরুতর জখম করে লায়ন কমরউদ্দিন আহমেদকে।
বিএনপি জামায়াত জোটের লোকজন লায়ন কমরউদ্দিন আহমেদকে এভাবে নির্যাতন করার আরও একটি কারণ রয়েছে। সেটি হলো তাঁর বড়ভাই আলহাজ সালাহ উদ্দিন আহমদে সিআইপি তৎসময়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুলত আওয়ামী পরিবারের সন্তান হওয়ায় ওইদিন তাকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এরপরও অদ্যবদি লায়ন কমরউদ্দিন আহমদ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সংক্রিয় রয়েছেন। মিছিল সমাবেশে রয়েছেন অগ্রভাগে। এমনকি শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও তিনি আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সবধরণের বিপদের মুর্হুতে পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখনো খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
লায়ন আলহাজ কমরউদ্দিন আহমেদ ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের জনক। তাঁর সহ-ধর্মীনি সৈয়দা রিফাত আক্তার নিশু চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি চট্টগ্রাম একাডেমির স্থায়ী পরিচালক, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতির কার্যকরি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এরআগে তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের জাতীয় মহিলা সংস্থা চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাবেক বোর্ড সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চট্টগ্রামের স্বনামধন্য ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে উৎপ্রোতভাবে জড়িত আছেন।
স¤প্রতিসময়ে সৈয়দা রিফাত আক্তার চকরিয়া উপজেলার বরইতলীস্থ পহরচাঁদা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একমাত্র ছেলে রাফসান কমর আমেরিকায় গ্রাজুয়েশন করে কানাডার ইউনির্ভাসিটি থেকে উচ্চতর পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে সেখানে একটি বহুজাতিক কোম্পানীতে রয়েছেন।
বুধবার ৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে কক্সবাজার জেলার সর্বসাধারণের দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন লায়ন আলহাজ কমরউদ্দিন আহমেদ। একইসঙ্গে তিনি চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে তাকে মুল্যায়িত করার জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোনদিন অপরাজনীতি করিনি। চেষ্ঠা করেছি, সবার অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় পরিচ্ছন্ন রাজনীতি উপহার দিতে। বড়জনকে সম্মাণ করেছি, ছোটদের আদর স্নেহ দিয়েছি। সংগঠনকে গতিশীল করতে নেতাকর্মী সবার সহযোগিতায় একসঙ্গে কাজ করেছি। সবাইকে নিজের মতো করে আপন করার মধ্যদিয়ে রাজনীতি করেছি। তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকার সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে বিমাতাসুলভ কোন আচরণ করিনি। চেষ্ঠা করেছি, সাধ্য মতো এলাকার উন্নয়ন করতে, জনগনের সু:খ দু:খের সারথী হতে। আশাকরি মমতাময়ী নেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা ত্যাগের মুল্যায়ন করবেন। ##