কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারে পিএমখালীতে প্রকাশ্যে মোরশেদ বলী নামে এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আ.লীগ-যুবলীগের ১০নেতাসহ ২৬ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাত আরো ৮-১০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে নিহতের ভাই জাহেদ আলী।
শনিবার (৯ এপ্রিল) বিকেল ৫ টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি রুজু করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি মুনির উল গিয়াস।
মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মাইজপাড়ার কবির আহমদের পুত্র সদর আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মালেক (৪৫)কে।
এছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আলাল, যুবলীগনেতা কলিম উল্লাহ (৩২), সাবেক মেম্বার মূলহোতা মাহামুদুল হক (৫২), ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এবং ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আরিফ উল্লাহ (৩৫) কক্সবাজারের আলোচিত মো. আলী প্রকাশ পাওয়ার আলীর দুই ভাই মাহামুদুল করিম (৪০), তার ভাই দিদারুল আলম (৩০),সহ নামীয় ২৬ জন কে মামলার আসামী করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামী রয়েছে আরও ৮/১০জন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) মায়ের জন্য ইফতার কিনতে গিয়ে চেরাংঘর বাজারে জনসম্মুখে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন পিএমখালী এলাকার মোরশেদ প্রকাশ বলী মোর্শেদ।
পুলিশ ঘটনার দিন রাতে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৩জনকে আটক করে আদালতে প্রেরন করেছে। ধৃত সেই ৩ জনকে এই মামলার আসামী করা হয়েছে। তারা হচ্ছে দিদার, ইয়াছিন ও শাহীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,বিশালাকার হাতুড়ির প্রথম আঘাতেই মাটিতে পড়ে যান মোরশেদ। ঘটনার আকস্মিকতা উপলব্ধি করতে পেরে হামলাকারীদের বলছিলেন, ‘আমি রোজায় বেশি ক্লান্ত, ইফতারের সুযোগ দাও, মারতে চাইলে ইফতারের পর মারিও।’
কিন্তু রোজাদার বলার আকুতিও তাদের দমাতে পারেনি।
হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাবাজার এলাকার আলী আহমদ কোম্পানি জানান, বাজার করতে চেরাংঘর বাজারে পৌঁছানোর একটু পর শোরগোল শুনতে পাই। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি গেলে পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন হাজারিকে বলতে শুনি, ‘উপরের নির্দেশে তারে (মোরশেদ) মেরে ফেলা হচ্ছে, কেউ সামনে আসবে না। যারা আসবে তাদেরও অবস্থা খারাপ হবে।‘
এ সময় আবদুল মালেকসহ ১৫-২০ জন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী মোরশেদকে প্রহার ও কোপাচ্ছিলেন। সবাইকে তদারকি করছিলেন পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা আলাল। এলোপাতাড়ি মারধর ও কোপানোর ফলে মোরশেদ একটু নিস্তেজ হয়ে গেলে কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষণ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হামলাকারীরা।
এদিকে গতকাল মোর্শেদের জানাজায় গিয়ে জেলা আলীগ সেক্রেটারী মুজিবর রহমান ঘোষনা দিয়েছেন, হত্যাকারীরা তার দলের কেউ হতে পারেনা। মামলার আসামীরা কেউ দলের অন্তর্ভূক্ত হলে তাদের বহিস্কার করা হবে।