ফারুক আহমদ, উখিয়া : কক্সবাজার-৪ সংসদীয় আসন উখিয়া টেকনাফে নির্বাচনী উত্তাপ দিন দিন বেড়েই চলছে।ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিনা বাধাঁয় নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীকে গনসংযোগ প্রচার প্রচারণা ও পথসভায় পথে পথে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ এ পর্যন্ত উখিয়া টেকনাফের প্রায় অর্ধশত বিএনপি’র নেতা কর্মী গ্রেপ্তার করেছে এবং সংখ্য ঘর-বাড়িতে হামলা ভাংচুর করেছে এমন অভিযোগ সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শাহজাহান চৌধুরীর। সর্বশেষ ২০ডিসেম্বর ভোর সকালে উখিয়া বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান সোলতান মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অভিমত যে ভাবে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, ঘরে ঘরে হুমকি, তালিকা তৈরি এবং থানায় মামলার প্রতিযোগিতা ও গন গ্রেপ্তারের কারণে উখিয়া টেকনাফে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ট পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। সরকারী দল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গনসংযোগ ও নির্বাচনী কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চালিয়ে গেলেও বিএনপি’র প্রার্থীকে নানা ধরণের হুমকি এবং পথ সভায় বাধাঁ দেওয়ার কারণে ধানের শীষ মার্কার সমর্থক ও ভোটার গন চরম আতংকে রয়েছে। গণগ্রেপ্তার দেখে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা আত্বগোপনে চলে গেছে। এভাবে চললে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ আদৌ কি অবস্থায় দাড়াবে বুঝা মুসকিল।
নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় সংসদের তপশীল ঘোষণার পর উখিয়া টেকনাফ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাংসদ আবদুর রহমান বদি’র স্ত্রী শাহিনা আক্তার চৌধুরী বেশ জোরে শুরে নৌকা মার্কার নির্বাচনী কার্যক্রম দিন রাত চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ দলীয় জোট তথা বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, নৌকা মার্কার জনসভায় প্রকাশ্যে সাংসদ বদি তার বক্তব্যে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। শুধু তাই নয় সাংসদ বদির নির্দেশে টেকনাফ থানার ওসি ও উখিয়া থানার ওসি গত দু সপ্তাহে একাধিক মিথ্যা মামলায় শত শত নেতা-কর্মীদেরকে আসামী করে। টেকনাফ বিএনপি’র সিনিয়ন নেতা মেম্বার সোলতান আহমদ, মেম্বার মোহাম্মদ হাশেম, মেম্বার কবির আহমদ, উখিয়া বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরী সহ এ পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী অভিযোগ করে আরও বলেন, নৌকা মার্কার সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী জনসভা বা পথ সভা করলেও ধানের শীষ র্মাকার সমর্থনে নির্বাচনী পথ সভা গুলোতে বাঁধা দিচ্ছে প্রশাসন ও পুলিশ। ইতিমধ্যে উখিয়া সদর ষ্টেশন ও হোয়াইক্যং ষ্টেশনে পথসভা গুলো হতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ ও পুলিশবাহিনী যৌথভাবে বিএনপি’ যুবদল ও ছাত্র দলের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারে নামে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশী ও ভাংচুর চলাচ্ছে। বর্তমানে তাদের ভয়ে শত শত নেতা-কর্মী ঘর ছাড়া।
উখিয়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে ধানের শীষ মার্কার নির্বাচনী কার্যক্রমে পথে পথে বাঁধা ও অসংখ্য নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। গ্রেপ্তার করেছে বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরী সহ একাধিক নেতা। তিনি বলেন, এভাবে হলে আমরা কি ভাবে ধানের শীষ মার্কার নির্বাচনী গনসংযোগে অংশ নেব।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা জালিয়া পালং ইউনিয়নে পর পর দুটি নৌকা মার্কার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবুল খায়ের জানান, নৌকা মার্কার নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামী হিসাবে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উখিয়া বিএনপি’র সহ দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী আওয়ামী লীগের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিজেরা অফিস ও গাড়ি ভাংচুর করে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।
বিএনপি’র তথা ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী সাবেক সাংসদ জেলা বিএনপি’র সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জেলা রির্টারিং অফিসারের নিকট দাবি জানিয়ে বলেছেন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ট ভাবে ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে হামলা মামলা ও গ্রেপ্তার বন্ধ এবং নির্বাচনী গণসংযোগ স্বাভাবিক ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।