শ.ম.গফুর, উখিয়া :
উখিয়া উপজেলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থেকে শনিবার দিবাগত রাত ও রবিবার সকাল পর্যন্ত কাল বৈশাখী ঝড়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বোরো ধানের। ঝড়ের কারনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে পড়েছে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায়। তবে রাতে উপজেলা সদরসহ আশপাশের কয়েক গ্রামে বিদ্যুৎ আসে আর যায় অবস্থা থাকলেও বাকি পুরো উপজেলা ছিল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলা সদরের বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করলেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়, এ কাল বৈশাখী ঝড় শুক্রবার রাতের পর শনিবার দিন আর দিনের পর শনিবার পুরো রাত প্রবল বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায় সমানতালে। রবিবার সকালে গুড়িয়া -গুড়ি বৃষ্টি হলেও সকাল ৭ টা থেকে রোদের দেখা মেলে। ফলে গত তিনদিন পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত স্থায়ী ছিল। এক টানা মুষল ধারে বৃষ্টিপাত হয় । এতে বোরো চাষীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানাগেছে।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের, ফলিয়াপাড়া, হিজলিয়া, মৌলভীপাড়া, হাজিরপাড়া, সিকদারবিল,গয়ালমারা, চাকবৈঠা, কামরিয়ারবিল, পূবডিগলিয়া, ডেইলপাড়া, টাইপালং, লম্বাঘোনা, পাতাবাড়ি, পালংখালী ইউনিয়নের ধামনখালী, রহমতেরবিল, তাজনিমারখোলা, বালুখালী, শিয়াইল্যাপাড়া, পূর্ববালুখালী, পশ্চিম বালুখালী,উখিয়ার ঘাট,তেলীপাড়া, থাইংখালী, জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি, পাইন্যাশিয়া, সোনারপাড়া, নিদানিয়া, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পাতাবাড়ি, পাগলিরবিল, মরিচ্যা, পশ্চিম মরিচ্যা. চৌধুরীপাড়া, রতœাপালং ইউনিয়নের মাতবরপাড়া, তেলিপাড়া, ভালুকিয়া, তুলাতলি সহ ৫ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের বোরো চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজাপালং ইউনিয়নের ফলিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা গফুর উদ্দিন কোম্পানী বলেন, তার প্রায় ১০ একরের বেশি বোরো চাষাবাদ মাছকারিয়ার ঢেবায় কাল বৈশাখী ঝড়ে ডুবে গেছে। একই ভাবে রত্না পালং ইউনিয়নের গয়ালামারা গ্রামের কৃষক সাবেক ইউপি সদস্য মাহামুদুল হক বলেন, সে এবার প্রায় ৫একর জমিতে বোরো চাষাবাদ করেছিল, মাঝখানে ব্লাস্ট রোগে আক্রমন করে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়, এরপরও সে আশাবাদী ছিল বোরো ঘরে তুলতে পারলে কোন রকম লোকসানের হাত রক্ষা পাবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঝড়ের পানি ভাসছে এখন তার চাষাবাদ। উখিয়ার ঘাটের কৃষক আমির হোছন ও কামাল উদ্দিন জানান,গত ৩ দিনের বৃষ্টিপাতে তার চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। আশানুরূপ ফলন পাওয়া নিয়ে সন্দেহ করছি। তিনি আরো বলেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে উপজেলার এক-তৃতীয়াংশ বোরো চাষাবাদ ক্ষয়ক্ষতির সম্মূখীন হবে। কারণ বৃষ্টিতে অনেক পাঁকা ধান ঝড়ে পড়ে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, বোরো ফলন ভাল হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা পল্লী বিদ্যুত অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সালাউদ্দিন মাহমুদ জোয়াদ্দার বলেন, কালবৈখাশী ঝড়ে অনেক জায়গায় বিদ্যুতের গুটির ওপর গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন হয়ে পড়ে। তবে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে বিদ্যুত ও স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে নিশ্চিত করেন।