মুহাম্মদ হানিফ আজাদ : গত ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী কক্সবাজারের উখিয়া -টেকনাফ উপজেলায় আশ্রয় নিয়েছে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বাস্তুচ্যুত এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও হোস্ট সম্প্রদায়ের জন্য এনজিও ও আইএনজিও এর মানবিক কার্যক্রম প্রশংসনীয়। কিন্তু স্থানীয় জনগোষ্ঠীর এই বিপূল সংখ্যক শরণার্থীদের জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক ও বাস্তুুসংস্থানজনিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়ত, তাই RRRC ও এনজিও ব্যুরো স্থানীয়দের চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কিন্তু DRC এবং Codec নামক এনজিও মাঠ পর্যায়ে কর্মী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুব সমাজের নেতৃবৃন্দরা। সরকারি নির্দেশনায় রোহিঙ্গাদের গার্ড এবং ক্লিনার ব্যতিত অন্য কোন পদে চাকরিতে না নেয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা থাকলেও উল্লেখিত এনজিও, আইএনজিও স্থানীয়দের বঞ্চিত করে রোহিঙ্গাদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। যার ফলে স্থানীয়দের মাঝে সৃষ্টি হচ্ছে ক্ষোভ যা অপ্রিতিকর ঘটনার জন্ম দিতে পারে। DRC নামক আইএনজিও সাইট ম্যানেজমেন্ট নামক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ক্যাম্প- 8E, 8W, 9, 10, 11, 12 তে ভলেন্টিয়ার পদে চাকুরী থেকে কিছু স্থানীয়দের ছাটাই করে পুনরায় রোহিঙ্গা নিয়োগ সহ ১৫৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উচ্চ বেতনে চাকুরী দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে় যাচ্ছে এবং CODEC নামক এনজিও wfp এর অর্থায়নে school feeding program in camps নামক প্রকল্পে ১৬টি সেবা সেন্টারে ৪০১জন রোহিঙ্গা শরণার্থী ভলেন্টিয়ার পদে চাকুরী করে যেখানে একজনও বাংলাদেশী নেই। দুঃখজনক বিষয় হলেও সত্য এই যে উক্ত প্রকল্পের সকল সেবা সেন্টার হোস্ট কমিউনিটিতে হওয়ায় প্রতিটি অফিসে কভিড পরিস্থিতিতেও কমপক্ষে ৪০-৫০জন রোহিঙ্গা ভলেন্টিয়ার চাকুরী করায় যেকোন সময় স্থানীয়দের সাথে অপ্রতিকর ঘটনা গঠতে পারে এবং অপরাধ কর্মকর্তা বাড়তে পারে। যেমন চাকরী নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনায় স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেয়ার বিষয়টি সু স্পষ্ট থাকলেও অবহেলা করা হচ্ছে। যা এনজিও ব্যুরো এবং আরআরআরসি (RRRC) নিয়ম পরিপন্থী। এই ধরনের চরম অনিয়মের বিষয়ে অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি, ৫নং পালংখালী উখিয়া সংশ্লিষ্ট সিআইসি কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েও এনজিও কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের চাকরী থেকে বাদ দেওয়া ও স্থানীয়দের নিয়োগ কার্যক্রমে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। DRC এবং CODEC নামক এনজিও অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের চাকুরী থেকে বাদ দিয়ে উক্ত কর্মস্থলে স্থানীয়দের নিয়োগ নিশ্চিত না করলে দাবি আদায়ে অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি ৫নং পালংখালী উখিয়া ক্যাম্পে প্রবেশ করতে না দেয়ার মত কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিঃ রবিউল হোছাইন । এই বিষয়ে কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল গফুর নান্নু, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তাহিজুল আক্তার জুয়েল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সহমত পোষণ করে একই পূনরাবৃত্তি করেন।তাই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করে স্থানীয়দের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ইউএনও মহোদয়, আরআরআরসি মহোদয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন পালংখালী অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি। রোহিঙ্গা কবলতি পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান এনজিওরা স্থানীয় যুবকদের চাকুরী না দিয়ে রোহিঙ্গা যুবকদের চাকুরী দেওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।