কক্সবাজার প্রতিনিধি :
কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে তরুণী স্বর্ণা রশিদের (২১) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। শুধু অতিরিক্ত ইয়াবা সেবনই নয়, ওই তরুণী বন্ধুদের ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
মৃত্যুর কারণ খুঁজতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এরই মধ্যে স্বর্ণার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘ময়না তদন্তে শুধু ইয়াবা সেবন নয়, তিনি বন্ধুদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না তার আলামত সংগ্রহ করেছেন চিকিৎসকরা।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, নিহত ছাত্রী একাধিক ব্যক্তির ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে আলামত মিলেছে। তবে ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। আপাতত ইয়াবা সেবনের বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছি।
আরও পড়ুন- অতিরিক্ত ইয়াবা সেবনে তরুণীর মৃত্যু
জানা গেছে, স্বর্ণা রশিদ তার ১০ থেকে ১১ জন বন্ধুর সঙ্গে কক্সবাজারে বেড়াতে যায়। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজারের হোটেল জামান নামের একটি হোটেলে তারা কক্ষ ভাড়া নেন। বিকালে সৈকত ভ্রমণ শেষে হোটেল কক্ষে ফিরে সবাই মাদকের আড্ডায় বসেন। অতিরিক্ত মাদক সেবনে বেহুঁশ হয়ে পড়েন স্বর্ণা। এ সময় তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।
জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সন্ধ্যার পর মেয়েটিকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে আমি তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিটে ভর্তি করার পরামর্শ দেই। কিন্তু তারা ভর্তি না হয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে হোটেল ফিরে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর সঙ্গীরা আবারও তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা। কিন্তু ততক্ষণে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।’ ডাক্তারের মতে, অধিক পরিমাণ (ওভার ডোজ) ইয়াবা সেবন করায় তার মৃত্যু হয়েছে।
তাৎক্ষণিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে সঙ্গীরা পালিয়ে যান। তবে পুলিশ ওয়ালী আহমদ খান নামের একজনকে আটক করতে সক্ষম হন। আটক ওই শিক্ষার্থী রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী রোডের মনিমান টাওয়ারের বাসিন্দা আলী রেজা খানের ছেলে। আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, হোটেলটি বর্তমানে কারাগারে থাকা ইয়াবা সম্রাট শাহজাহান আনসারীর। তিনি টেকনাফে ১৬ ফেব্রুয়ারিতে আত্মসমর্পণকারী ১০২ মাদক কারবারির মধ্যে অন্যতম।