আজ নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে মমতার মিছিল

: নুরুল করিম রাসেল
প্রকাশ: ৫ years ago

টেকনাফ টুডে ডেস্ক : সদ্যপ্রণীত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতায় পথে নামছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন আইন আর প্রস্তাবিত এনআরসি কোনোটি রাজ্যে কার্যকর করতে দেয়া হবে না বলে ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এবার তৃণমূল নেত্রী হিসেবে তার মিছিল হবে রাজনৈতিক প্রতিবাদের জন্য।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যারা গণতান্ত্রিক পথে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করছেন, তাদের সকলকেই সোমবার থেকে তৃণমূলের ডাকা মিছিলে যোগ দেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন মমতা। প্রসঙ্গত, বিতর্কিত এই আইনের প্রতিবাদে উত্তরপূর্ব ভারতসহ পশ্চিমবঙ্গ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে।

সোমবার মমতার পথে নামার আগেই গতকাল রোববার রাতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির নেতারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির কথা তাকে জানিয়েছেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বেশি প্রতিবাদে জানাতে শুরু করলে সেখানে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার।

গতকাল রোববার পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত লাগোয়া রাজ্য ঝাড়খণ্ডের দুমকায় নির্বাচনী প্রচারে যাতায়াতের পথে বিমানবন্দরে কিছু সময়ের জন্য নেমেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্য বিজেপির নেতারা ওই সময় মোদির সঙ্গে দেখা করেন। এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্যপালকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা অভিযোগ করেছেন, কিছু সাম্প্রদায়িক দল ও গোষ্ঠী বহিরাগতদের এনে উস্কানি দিয়ে বাংলায় অশান্তি বাধাচ্ছে, যা বড় রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ। বাংলার মানুষই এই চক্রান্ত ব্যর্থ করবেন বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিক্ষোভে যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করছে মমতা তাদের বিচারের আওতায় নেবেন বলে হুঁশিয়ার করেন।

মমতা বলেন, ‘নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে সোমবার থেকে তিনদিন আমরা পথে নেমে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ মিছিল করবো। যারা হঠকারী কাজ করছেন, তাদের বলছি, ধ্বংসাত্মক পথে যাবেন না। যারা প্রতিবাদ করতে চান, তাদের সকলকে বলছি আসুন, একসঙ্গে ওই মিছিলে পা মিলিয়ে গণতান্ত্রিক পথে প্রতিবাদ করি।’

মমতার নেতৃত্বে আজ তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিল হবে অম্বেদকরের মূর্তি থেকে জোড়াসাঁকো পর্যন্ত। যাদবপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে যদুবাবুর বাজার পর্যন্ত মিছিল হবে মঙ্গলবার। পরদিন বুধবার মিছিল হাওড়া ময়দান থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত। এর আগে অবশ্য দলের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা প্রায় সকলেই নিজ এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করেছেন।

বাম দলগুলোও আজ সোমবার থেকে তিনদিন ব্লক এবং ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মিছিল করবে। আগামী বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বামদের কেন্দ্রীয় মিছিল হবে কলকাতায়। বহিরাগতদের দোষারোপ ও ইন্টারনেট বন্ধের চেনা ছকে না গিয়ে অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি তুলেছে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের মতো বামপন্থী দল।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছেন। কিন্তু সক্রিয় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না। এভাবে তার ভোটবাংক বাঁচলেও রাজ্য বাঁচবে না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দলের অন্য নেতারা অভিযোগ করেছেন, ‘রাজ্য সরকারের মদদে গুন্ডামি চলছে রাজ্যে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে রাজ্য সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মমতার এক মন্ত্রী। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে মোদির আলোচনা হয়েছে কি না, এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তবে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর পর ঝাড়খণ্ডে গিয়ে মোদি মন্তব্য করেছেন, ‘কারা গোলমাল করছে, পোশাক দেখেই তা চেনা যাচ্ছে।’