টেকনাফ টুডে ডেস্ক : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের দারিদ্রসীমা ১০ শতাংশে নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে তথ্যমন্ত্রীর ঐচ্ছিক তহবিল থেকে ২৬১ জনকে আর্থিক অনুদান প্রদান এবং এডিপির অর্থায়নে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা এখন দেশকে ক্ষুধামুক্ত করেছি। আগামী নির্বাচনের আগে দারিদ্র ১০ শতাংশে নেমে আসবে। ক্রমান্বয়ে দেশ হবে দারিদ্রমুক্ত।’
সরকারের এ মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২০০৮ সালে যখন সরকার গঠন করা হয় তখন বাংলাদেশের দারিদ্রতা ছিল ৪১ শতাংশ। বর্তমানে সেটি কমে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে যা আগামী নির্বাচনের আগে ১০ শতাংশে নেমে আসবে। দারিদ্রতা এখনো আছে, তবে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ রচনা করতে পেরেছি আমরা।’
‘যেহেতু দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, দেশের মানুষকে খাইয়ে খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকছে, তাই খাদ্য রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’, যোগ করেন মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্তির সাথে দেশকে ভিক্ষুক মুক্ত করার জন্যও প্রধানমন্ত্রী কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। ইতিমধ্যে দেশের কয়েকটি উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখন প্রকৃতপক্ষে বাধ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করা অনেকাংশে কমে গেছে। সন্তান সন্ততিরা যেসব বাবা-মার খবর রাখেন না এমন নানাবিধ পারিবারিক ও সামাজিক কারণে কিছুসংখ্যক ভিক্ষাবৃত্তি আছে। দেশে যে পরিমাণ ভিক্ষাবৃত্তি আছে, তাতে এখন আর কেউ মানুষের দরজায় গিয়ে বাসি ভাত খোঁজেন না। বাসি ভাত খোঁজার ডাক এখন আর বাংলাদেশের কোথাও শোনা যায় না। কারণ বাসি ভাতের সমস্যা আমরা সমাধান করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘ঐচ্ছিক তহবিলের উপকারভোগী নির্বাচনে কারা নৌকায় ভোট দিয়েছেন, আর কারা দেননি তা বিবেচনা করা হয়নি। দারিদ্রকেই বিবেচনা করা হয়েছে। গত ১১ বছর ধরে প্রতি বছরই যিনি পাওয়ার যোগ্য তাকেই দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগেও রাঙ্গুনিয়ায় এমপি, মন্ত্রী ছিল কিন্তু তারা এ ধরনের কোনো সুবিধা সাধারণ মানুষের নাগালে আনেনি।’
পাঁচ বছর ধরে যারা সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর না রেখে শুধু ভোটের আগে এসে রাজনীতি করেন তাদের বিষয়ৈ সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী এ সময় বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ দলীয় নেতাদের দুর্গত মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানান।
নিজ আবাসভূমি রাঙ্গুনিয়ার উন্নয়ন কাজের বিষয়ে ড. হাছান বলেন, ‘কয়দিন আগে বন্যায় রাঙ্গুনিয়ায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৮০ টন জিআরের চাল বরাদ্দ দিয়ে বিতরণ করা হয়েছে। যেসব রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো পুনর্নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণসহ প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। শিলক খালের ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পূর্বিতা চাকমা, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, মনোয়ারা বেগম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ইদ্রিছ আজগর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তালুকদার, কোদালা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম তালুকদার, সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খায়রুল বশর মুন্সি প্রমুখ।