শামীম ইকবাল চৌধুরী : অবশেষে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কম্বোনিয়া এলাকার ২৮ বছর বয়সী নারীর করোনা পজেটিভ সনাক্তের রোগীর খুজঁ মিলল।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৫ টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি।
তিনি জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত ওই নারীর গত ২৬ এপ্রিল নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে রোগীর জ্বর ও সর্দিকাশির কথা শুনে চিকিৎসক নিয়মিত নমুনা সংগ্রহের অংশ হিসেবে তার নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পাঠানো হয়। ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৫টায় পাওয়া ফলাফলে তার কোভিড-১৯ পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও যোগাযোগের সম্ভব হয়নি।
আর এদিকে, স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানান,করোনা সনাক্ত রোগীর স্বাস্থ্য বিভাগের রেজিষ্ট্রাডে নাম,ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা অনুযায়ী নাম,ঠিকানায় রোগী খুঁজ নিতে গিয়ে প্রকৃত রোগী নাম ও ঠিকানা ভূল দেওয়াতে বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়। তবে এলাকার মেম্বারসহ এলাকাবাসীর সহযোগীতায় প্রকৃত রোগীগে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। তাকে হাসপাতালের আইসোলেশ ইউনিটে রাখা হয়েছে। ন্যাশনাল গাইড লাইন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অন্য এক সূত্রে জানাযায়, প্রকৃত রোগী সনাক্ত করতে গিয়ে থমকে যায় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। রেজিষ্ট্রাডে লিপিবদ্ধ করা নাম ও ঠিকানা অনুযায়ী নারীটির কাছে গিয়ে নমুনা দেয়ার কথা সরাসরি অস্বিকার করে বলেন, আমি মাস ধরে হাসপাতালে যাওয়া আসা করিনি। কোন নমুনাও দেয়নি। তবে আমার নাম,ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার সঠিক। তখন এলাকার লোকজন উৎকন্ঠায় সময় পার করছে পুরো রাত ।
এসময় এলাকাবাসী খুজঁ খবর নিতে গিয়ে এক নারীকে সনাক্ত করে এলাকাবাসী। সেও অস্বিকার করে।পরে স্বাস্থ্য বিভাগের নমুনা সংগ্রকারী কর্মচারী রাতে পৌছেঁ নারীকে দেখে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে এলাকাবসীরা জানান, রেজিষ্ট্রাডে নাম,ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা নারী হলো করোনা পজেটিভ সনাক্ত হওয়া নারীর আপন ননদ। দীর্ঘদিন ধরে ননদ ভাবীর মধ্যে ঝগড়া ছিলো। রোগীর স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভালো নেই। সে নিজের তথ্য গোপন রেখে ননদের নাম,ঠিকানা কেন লিপিবদ্ধ করতে বল্লো তার জবাব কাকেও বলতে নারাজ। তবে সনাক্ত হওয়া রোগী গ্রাম থেকে উপজেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে এলাকাবাসীরা জানান।
৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো,আলী হোসেন জানান, নমুনা সংগ্রহ করে ওই নারীকে কি ভাবে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দিলো স্বাস্থ্য বিভাগ। গত রাত রোগি কোন নমুনা দেয়নি বলে অস্বিকার করাতে ঘটনাটি পুরো ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। সারা রাত এলাকার লোকজন উৎকন্ঠায় ছিলো। পরে গোপন ভিত্তিতে খুজাঁখুজির পর আবশেষে আসল রোগীর খুজঁ মিলল।
উল্লেখ্য, করোনা সনাক্ত নারীর আগে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়ী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার কোনাপাড়া গ্রামের ঢাকা তাবলীগ ফেরত আবু ছিদ্দিক নামক এক ব্যাক্তি। গত ২৬ এপ্রিল রবিবার আইসোলেশনে ১০ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর প্রাথমিক ভাবে করোনা মুক্ত ঘোষণা করেছিলো নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তাকে ন্যাশনাল গাইড লাইন অনুযায়ী যাবতীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়ে ছিল। তাকে নিজ এলাকায় সাত দিন হোম কোয়ারেন্টেইনে থাকার পরার্মশ দেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক।সাত দিনের মাথায় চতুর্থ বারের মতো পূনঃরায় নমুনা সংগ্রহ করে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর সে সমাজে চলাফেরা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।